আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

সাংবাদিক নাদিম হত্যা: বন্ধুকধারী রিফাত গেলো কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলানিউজের সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রায় এক মাস হতে চললেও এখনো অধরা বহিস্কৃত চেয়ারম্যান বাবুর ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাত৷ রিফাত তাহলে গেলো কোথায়? এখনো রিফাত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরা না পড়ায় বেশ আতংকে রয়েছেন নাদিমের পরিবার।

শনিবার (০৮ জুলাই) বিকেলে এই আতংকের কথা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মেয়ে রাব্বিলাতুল জান্নাত।

রাব্বিলাতুল জান্নাত বলেন, আমার বাবার হত্যাকাণ্ডে বাবু ও তার ছেলে সরাসরি জড়িত ছিলো এবং তাদের নেতৃত্বে খুন হয় আমার বাবা। এ ঘটনার পিছনে আরও মাস্টারমাইন্ড রয়েছে। বাবার মাথায় সন্ত্রাসী রিফাত ইট দিয়ে আঘাত করে। সে বন্দুক নিয়ে চলাফেরা করতো, যার ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার গ্যাং গ্রুপের আরেক সদস্য রাকিবিল্লাহ, যে মামলার ৩নং আসামি৷ সেও খুব ভয়ংকর সন্ত্রাসী। আমার বাবাকে এই রাকিবিল্লাহ সেদিন খুব মেরেছে। এরা গ্রেফতার না হওয়ায় আমরা আতংকে আছি।

তিনি বলেন, বন্ধুক নিয়ে রিফাত কিভাবে চলতো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা আগে কখনো খোঁজখবর নেয়নি। সে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেই এসব অস্ত্র নিয়ে গ্যাং গ্রুপ গড়ে তুলেছিলো। সেই রিফাতকে এখনো খুঁজে পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এতে আমরা হতাশ। আমার বাবার খুনি রিফাত গেলো কোথায়, রিফাত বাহিনী কি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে?

জান্নাত আরও বলেন, খুনি রিফাতসহ এজাহার ভুক্ত ১৭ আসামি এখনো অধরা। খুনিরা বাইরে থাকলে আমরা ত অনিরাপদবোধ করবই। ইতিমধ্যে আমাদের হয়ে কথা বলায় রিফাতের পক্ষ নিয়ে একজনকে হুমকি দিয়েছেম রিফাত বাহিনীসহ আমার বাবা হত্যার পিছনে যত কালো হাত ছিলো, সকল মাস্টার মাইন্ডকে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।

ফাহিম ফয়সাল রিফাত সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর ছেলে। তিনি বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়কও ছিলেন। তিনিই সাংবাদিক নাদিমকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন। নাদিম হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামিও তিনি।

বকশিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল রানা বলেন, নাদিম হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে৷ এর মধ্যে এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি গ্রেফতার হয়েছে। বাকি আসামিদের হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় গ্রেফতার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় বাকি আসামিদের গ্রেফতার অভিযান চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে জামালপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরমান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে গত ১৪ জুন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম। প্রথমে তাকে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে ও পরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যান সাংবাদিক নাদিম।

এই ঘটনায় নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুুকে প্রধান আসামি করে নামীয় ২২ জন ও অজ্ঞাত নামা আরও ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে বাবু চেয়ারম্যানসহ ১৪ আসামি কারাগারে রয়েছে। ১৪ জনের মধ্যে প্রধান আসামী মাহমুদুল আলম বাবু, মনিরুজ্জামান মনির ও রেজাউল হত্যার দ্বায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ