আজ ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ ইং

কোহেলিয়া নদীর চর দখল করে ঘের নির্মাণ

আবু বক্কর ছিদ্দিক , মহেশখালী প্রতিনিধি:

দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর কোহেলিয়া নদী এক সময়ের বাণিজ্যিক নদীটি নানান উন্নয়ন প্রকল্পের কবলে পড়ে এখন প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। এবার ওই নদীর প্রতি চোখ পড়েছে ভূমিদস্যূদের। ইতিমধ্যে প্যারাবন কেটে ঘের নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে অনেকে । জানা গেছে, উপজেলার মাতারবাড়ী দক্ষিণ রাজঘাটের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন, কফিল আহমদ, জয়নাল , আবু বকর , গুরাইয়া , আজিজ ও উত্তরে খন্দারবিলের আব্বাস উদ্দিনের নেতৃত্বে চলছে কোহেলিয়া নদী দখল । তবে বন পাহারায় নিয়োজিত আব্বাস উদ্দীন নামের এ ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে মাতারবাড়ী ও মগনামা বনবিভাগের লোকজনের সাথে আঁতাত করে নির্বিচারে প্যারাবন কেটে কোহেলিয়া নদী ও বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে ফেলছে। ভুমিদস্যু আব্বাছ উদ্দিন ও কফিল জানান , আমরা মাতারবাড়ী বিট অফিসের অনুমতি নিয়েই ঘের নির্মাণ করছি । বিট অফিসকে টাকা দেওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেন এই ভুমিদস্যুরা। মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বনের জায়গা দখলে যেন চলে না যায় আপ্রাণ চেষ্টা করে গেলেও তবে এসব অবৈধ কাজ বন্ধে কোন ধরনের উদ্যোগ নেই মাতারবাড়ী ফরেষ্ট বিট কর্মকর্তা সহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের । সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কালারমারছড়া ইউনিয়নের ইউনুছখালীর পশ্চিমে কোহেলিয়া নদীর মীর আক্তার কোম্পানির নির্মাণাধীন সেতুর দক্ষিণ পাশে প্রায় এক কিলোমিটার নদীর জায়গা দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণের কাজ চললেও তা জানেননা মাতারবাড়ী স্থানীয় বিট কর্মকর্তা । তবে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলে জানান, রাজঘাটের জসিম ও কফিল সিন্ডিকেট এবং খন্দারাবিলের আব্বাস উদ্দীনের সাথে বনবিভাগের লোকজনদের গভীর সখ্যতা রয়েছে । ভুমিদস্যুরা মাতারবাড়ী বন অফিসের লোকজনদের টাকার বিনিময়ে চুপ করে রাখা হয়েছে । এজন্য উক্ত বিট কর্মকর্তারা নদী দখলের বিষয়টি দেখেও না দেখার বান অভিযানে যাচ্ছে না । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাতারবাড়ী সংলগ্ন কোহেলিয়া নদীর অপরপাড়ে মগনামা ইউনিয়ন। ওই এলাকার ছনুয়া রেঞ্জের আওতাধীন উজানটিয়া বনবিটের অধীনস্থ কোহেলিয়ার পাড় ঘেষে প্যারাবন কাটার হিড়িক চললেও বনবিভাগ সেই বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং প্যারাবন কাটার জন্য তাদের সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এতে মাতারবাড়ী নবাগত বিট কর্মকর্তা ও উজানটিয়া বিট কর্মকর্তারা জড়িত বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে । কোহেলিয়া নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও বাপা মহেশখালীর সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিকের নেতৃত্বে একটি টিম ২ এপ্রিল কোহেলিয়া নদী দখলের স্পট গুলো সরজমিনে পরিদর্শনে যান । এসময় তারা বলেন প্রতিবছর নানান ঘূর্ণিঝড় উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। এসব ঘূর্ণিঝড় থেকে প্যারাবন গুলো এখানকার মানুষদের রক্ষা করে। কিন্তু এখন নির্বিচারে সেই প্যারাবনই কাটা হচ্ছে । ফের নতুন করে নদীর জায়গা দখলে নিয়ে চিংড়ি ঘের তৈরি করছে ১০/১২ জনের একটি ভুমিদস্যু সিন্ডিকেট । আর এসব বন্ধে বনবিভাগ নিরবতার ভূমিকা পালন করছে বলে মনে হচ্ছে আমাদের । মাতারবাড়ী বিট কর্মকর্তাকে একাধিক বার অবগত করা সত্বেও তিনি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না । বরং তার কথাবার্তায় বুঝা যাচ্ছে তিনি নদী দখলকারীর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন । মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, নদীর চর কারো দখলে রাখার সুযোগ নাই। তিনি নদী দখলকারীদের উচ্ছেদ করতে মাতারবাড়ী বিট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান । পাশাপাশি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ