আজ ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ ইং

জাবিতে হল ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তালা ভেঙে রুম দখল ও মারধরের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ( জাবি) শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হলে রুম দখল করে তালা ভেঙে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে।
১৯ মার্চ ( মঙ্গলবার ) রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হলে তানজিম আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী তানজিম আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫০ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন যে, আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে ইংরেজি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী অনুরাগ দাসের নেতৃত্বে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফি এবং ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আই আই টি) ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরমানসহ কয়েকজন মিলে ৮০৮ নম্বর কক্ষের তালা ভাঙতে যায়। ওই রুমে এলোটেড শিক্ষার্থীরা তালা ভাঙতে বাঁধা দিলে হলের প্রাধ্যক্ষের নির্দেশে তালা ভাঙতে এসেছেন বলে জানান অভিযুক্তরা। এসময় তাদের হাতে রড ছিল বলে জানা যায়। অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে পরিচিত।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরিফু বলেন, ’ আমি কালকে ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। সন্ধ্যার দিকে কয়েকজন নিয়ে আমাদের রুমে তালা ভাঙতে আসলে আমার বন্ধু তাদেরকে বাধা দেয়। তখন তারা আমাদের তাদের সাথে কথা বলতে বলে । তারপর তাদের সাথে কথা বলার পর রাফি বলে বিষয়টা দেখছি। তারপর রাতের দিকে আবার তালা ভাঙতে আসে। এসময় রাফি কাপ ছুড়ে মারায় আমার বন্ধু তানজিমের পা কেটে যায়।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অনুরাগ বলেন, ’আমরা তথ্য পেয়েছিলাম ওই রুমে কেউ থাকে না।তাই আমরা রুমের তালা ভেঙে ভিতরে যায়। রুমে কেউ থাকে না এটা ভুল তথ্য ছিল। একটা একটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল।তালা ভাঙার বিষয়টা আমার ভুল হয়েছে , এটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিবে মাথা পেতে নিবো।’
মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকা অভিযুক্ত রাফি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ’কয়েকজন শিক্ষার্থী রুম পাচ্ছিল না। তাই আমরা জানতে পারি ৮০৮ নাম্বার রুম খালি ছিল। তাই আমরা ওদের রাখার জন্য তালা ভেঙে ছিলাম। মারধরের ঘটনা ঘটে নি।’ এ ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত আরমানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও তাজউদ্দিন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, ’আমি বিষয়টি জানার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং রাতেই ঘটনার তদন্তে হলের ওয়ার্ডেন ড আবদুস সাত্তার জয়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছি এবং তিন কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করতে বলেছি। রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।’
এসময় প্রাধ্যক্ষকে অভিযুক্ত রাফির নাম প্রাথমিক বরাদ্ধপত্রে না থাকলেও সে কীভাবে হলে আছে এবং শিক্ষার্থীদের রুম ফাঁকা করার এখতিয়ার কোথায় পেয়েছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি এই বিষয়ে খতিয়ে দেখবে এবং সে দোষী হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ৮০৮ নম্বর রুমের চারজন এলোটেড শিক্ষার্থী।তারা হলেন- ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৫০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ ও আরিফুল, বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শুভ এবং লোকপ্রশাসন ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ