আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুমে রাতভর র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি :

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের গণরুমে প্রথম বর্ষের ( ৫১ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের রাতভর র‌্যাগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই হলের দ্বিতীয় বর্ষের (৫০ তম ব্যাচ) কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগের ৫১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী ফুয়াদ হোসেন প্রক্টর বরাবর এই লিখিত অভিযোগ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ-উল হাসান।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী শেখ নাজমুস সাকিব, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুর হক লিমন, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের আশিক। তাঁরা সবাই আল বেরুনি হলের ৫০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

এছাড়া তাঁদের সঙ্গে নাম না জানা আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ মে রাত আনুমানিক ১২ টায় ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা গণরুমে এসে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতার নাম তুলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।

এ সময় মুরগি বানিয়ে (শাস্তির ধরন) বসিয়ে রাখার সময় এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এছাড়া আরেকজন শিক্ষার্থী উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁরা ক্ষ্যান্ত হননি। নোংরা ও বিকৃত ভঙ্গিতে পর্নোগ্রাফির ন্যায় আচরণ করায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দিয়ে। এরপর প্রায় ভোর ৪টা নাগাদ গণরুম থেকে তাঁরা বেরিয়ে যায়। এসব বিষয় নিয়ে আল বেরুনী হলের গণরুমের সকল শিক্ষার্থী অত্যন্ত ভীত ও শঙ্কিত।

ভুক্তভোগী ফুয়াদ বলেন, ওই রাতে আমাদের সবাইকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তাঁরা কক্ষের মধ্যে জামাকাপড় রাখার জন্য যে তার (ক্যাবল) ঝুলানো আছে তাতে দাঁত দিয়ে কামড় দিতে বলে। ছোটখাটো বিষয়ে তাঁরা আমাদের জানালা ধরে ঝুলে থাকতে বলে।

আমার রক্তচাপের সমস্যা আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার বন্ধু অজ্ঞান হয়ে গেলেও তাঁরা কেউ এগিয়ে আসেনি। হলে থাকতে আমি ভয় পাচ্ছি আমি শঙ্কিত।

অভিযুক্ত এনামুর রহমান মুঠোফোনে  বলেন, যে তারিখের কথা বলছেন ওইদিন আমি হলেই ছিলাম না। পরে তিনি ভুল নাম্বারে ফোন দিয়েছেন বলে কল কেটে দেন।

অভিযুক্ত আশিকের ফোনে কল দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তিনি কল কেটে দেন। অপর অভিযুক্ত সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ-উল হাসান  বলেন, অভিযোগ পত্রটি হাতে পেয়েছি। এটি আসলে হলের ঘটনা।

এটা হল প্রাধ্যক্ষের কাছে দেওয়ার কথা। শিক্ষার্থীরা আমার কাছে দিয়েছেন আমি ইতোমধ্যে হল প্রাধ্যক্ষকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে অফিশিয়ালি প্রাধ্যক্ষকে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে হল প্রশাসনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলবো।

আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, আমি অভিযোগের তথ্য পেয়েছি। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জানা মাত্রই আমরা হলের পক্ষ থেকে এবিষয়ে জরুরি মিটিং ডেকে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ঘটনার সত্যতার ভিত্তিতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করব।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ