আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি কমানোর আবেদন 

কে এম নজরুল ইসলাম :

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ পৌরসভা ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের জন্য ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৪,৪০০ টাকা। এমন অস্বাভাবিক ফি নির্ধারণের কারণে দুঃচিন্তায় পড়েছেন মালিক এবং চালকরা। অস্বাভাবিক ফি নির্ধারণের প্রভাব গিয়ে পড়বে যাত্রী সাধারণের ওপর।

এর প্রতিকার চেয়ে শ্রমিক-মালিক পক্ষ জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন।
যদিও ফরিদগঞ্জ পৌরসভার এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত ফি-টাই ভাবাচ্ছে সবাইকে।

সম্প্রতি পৌরসভায় হঠাৎ করে হু-হু করে বেড়ে যাওয়া ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে এই রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সের বিষয়টি কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু ইজিবাইকগুলোকে লাইসেন্সের জন্য ব্যাংক ড্রাফট বাবদ ১২,০০০ টাকা, ভ্যাট ১৫% (১,৮০০ টাকা), আয়কর ৫০০ টাকা, আবেদন ফি ১০০ টাকা সহকারে মোট ১৪,৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এত টাকা দিয়ে লাইসেন্স করা মালিকদের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তাছাড়া ইজিবাইক চালকদেরও দৈনিক জমা খরচ বেড়ে যাবে। এ বাড়তি টাকার চাপ গিয়ে পড়বে যাত্রীদের ওপর।

এদিকে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ পৌরসভা ইজিবাইকের লাইসেন্স বাবদ নিচ্ছে ৫ হাজার টাকা, শাহরাস্তি পৌরসভা নিচ্ছে ৩ হাজার টাকা। মতলব ও কচুয়া পৌরসভা এখনও লাইসেন্স সিস্টেম শুরু করেনি।

এ পৌরসভাগুলো ‘ক’ শ্রেণির হয়ে লাইসেন্স ফি কম নিচ্ছে অথচ ফরিদগঞ্জ পৌরসভা ‘খ’ শ্রেণির হয়েও কয়েকগুণ বেশি নির্ধারণ করেছে। অপরদিকে দৈনিক পৌরকর সব পৌরসভায় ১০ টাকা হলেও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় দিতে হয় ১৫ টাকা।

২২ সেপ্টেম্বর বুধবার মালিক ও চালকরা লাইসেন্স ফি কমানোর জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন। সেখানে তারা উল্লেখ করেন- ‘দীর্ঘ দেড় বছর লকডাউনে পরিবহন খাত বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে।

একই কারণে অনেকে ঋণগস্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ইজিবাইকের জমা কমে যাওয়ার পাশাপাশি এর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার।’

ইজিবাইক চালক মো. মুখলেছ বলেন, ‘ভাই, আমরা গরীব মানুষ। রুজিরোজগার নাই। কোনোরকম কষ্ট করে সংসার চালাতে হচ্ছে। এত টাকা কই থেকে দিবো।

ইজিবাইক মালিক কাজী ফারুক হোসেন চাঁদপুর প্রবাহকে বলেন, ‘লাইসেন্স হোক এটা আমরাও চাই। কিন্তু এত টাকা ফি দিতে হবে কেন? ফি’র হার কমিয়ে আনলে সকলেই সহজে লাইসেন্স করতে পারবে।’

বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা আকবর হোসেন মনির বলেন, ‘একটি পৌরসভায় লাইসেন্সবিহীন পরিবহন থাকা যুক্তিহীন; কিন্তু ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি ১৪,৪০০ টাকা হবে সেটাও মানা যায় না। আমাদের অঞ্চল এখনও কৃষিনির্ভর। ফরিদগঞ্জ এখনও সে অর্থে নগরায়ন হয়নি।

চাঁদপুর জেলার অন্যান্য পৌরসভার সাথে সমন্বয় করে এবং চালকদের আয়ের ওপর নির্ভর করে ফি নির্ধারণ করলে সুবিধা হবে। শ্রমিকদের স্বার্থে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে মনে করি।’

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সচিব মো. খোরশেদ আলমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলি। রবিবার বা সোমবারের দিকে অফিসে আসেন।’
ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, ‘এ বিষয়ে ক্যাশিয়ারের সাথে কথা বলেন।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ক্যাশিয়ার গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘পৌরসভার নিয়মিত সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে কেউ দ্বিমত করেনি। পরবর্তীতে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে বসে পুনঃনির্ধারণ করা হবে।’

৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন টিটু বলেন, ‘সভায় লাইসেন্সের বিষয়ে কথা হয়েছে, কিন্তু ফি যে কখন ১৪,৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে তা আমি জানি না।’

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ