আজ ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ ইং

আশুলিয়ায় ভুল করে মুত্রথলি কাটলেন চিকিৎসক, ১ মাস পর নারীর মৃত্যু

সাভার প্রতিনিধি :

ঢাকার আশুলিয়ায় ভূল অপারশনের প্রায় এক মাস পর রহিমা বেগম (৪৫) নামের এক নারী মারা গেছেন। জরায়ু টিউমার অপারেশন করার সময় মুত্রথলি কাটায় তিনি মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

বুধবার (১ মে) রাত ৯ টা ১৫ মিনিটে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় তিনি মারা যান।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল আশুলিয়ার জামগড়া ৬ তলা এলাকার বেসরকারি হাসপাতাল দি ল্যাব এইডে তার ভুল অপারেশন করেন ডা. ফৌজিয়া আক্তার। ঘটনার ১৮ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় দফায় অপারেশন হয় তার।

নিহত রহিমা আক্তার বাগেরহাট জেলার রেজাউল সিকদারের স্ত্রী। তিনি পরিবারসহ জামগড়ার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। এঘটনায় শোকের মাতম চলছে পরিবারে।

নিহতের ছেলে সম্রাট বলেন, তার মা রহিমা বেগম জরায়ু সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসা নিতে গত মাসের ২৭ এপ্রিল আশুলিয়ার ছয়তলা এলাকার “দি ল্যাব এইড” হাসপাতালে তার মাকে নিয়ে যান।

বিভিন্ন পরিক্ষার পর জরায়ু টিউমার অপারেশন করেন দি ল্যাব এইড হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ফৌজিয়া আক্তার। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হয়। নিরুপায় হয়ে আশঙ্কাজনক হওয়ায় ল্যাব এইড থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাপাতালে রেফার্ড করেন ডাক্তার।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল নিলে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করেন। এভাবে প্রায় ১৮ দিনে সাড়ে ৩ লাখ খরচের পর পরিক্ষা শেষে ঢাকা মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আবার একটি অপারেশন করেন।

অপারেশনের পর চিকিৎসকরা জানান, আগের অপারেশনটি ভুল করে রোগীর মুত্রথলি কেটে অনত্র লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে রোগীর প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

নিহতের স্বামী রেজাউল সিকদার বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার সাথে সাথেই বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষা করানো হয়। পরে তাদের হাসপাতালে অপারেশনের কথা বললে আমরা রাজি হই।

এর পর ডা. ফৌজিয়া আক্তার আমার স্ত্রীর জরায়ু টিউমার অপরেশন করেন। এসময় জরায়ু টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে ভুলবশত মুত্রথলি কেটে অনত্র লাগিয়ে দেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, অপারেশনের পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভূল অপারেশন বুঝতে পেরেও বিষয়টি গোপন রেখেছেন। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর সকল দায়ভার ল্যাব এইড হাসপাতালের।

এ বিষয়ে “দি ল্যাব এইড”হাসপাতালের ব্যবস্থাপক পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, রোগীর স্বজনদের সাথে গত কয়েক দিন আগে আমাদের আপোষ মিমাংশা হয়ে গেছে। একটু ভুল বোঝাবুঝি ছিল, তা ছাড়া কিছুই না।

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সায়েমুল হুদা বলেন, এধরনের কোন অভিযোগ আমরা পাই নি, তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে উক্ত হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও সংবাদ