নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার আশুলিয়ায় শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের মামলায় গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি মৃদুল দেওয়ানের ভাইসহ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গতকাল রাতে বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
মামলার আসামিরা হলেন- গণবিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দেলোয়ার ভূইয়া (২৬), তাজুল ইসলাম তাজ (২৩), শ্রাবণ শাহা ২২ (২৩) ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অন্তু দেওয়ান (২৮)। অন্তু দেওয়ান গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি মৃদুল দেওয়ানের ভাই বলে জানা গেছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল সকাল ১১ টার দিকে পিকনিকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আশুলিয়ার ফুলেরটেক এলাকায় নিয়ে যায়। পথিমধ্যে কোমল পানীয় ‘মজোর’ সাথে চেতনানাশক ঔষুধ খওয়ালে কিছুক্ষণ পরে অচেতন হয়ে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে বিকেল ৫ টার দিকে জ্ঞান ফিরলে আসামিদের ফুলের টেকের ম্যাচে নিজেকে দেখেন ভুক্তভোগী এবং বুঝতে পারেন তার সাথে জোর পূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। পরে ডাকচিৎকার শুরু করলে আসামিরা ধারণকৃত ভিডিও ও অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরাল করে দেওয়াসহ এসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয়। ঘটনার পর থেকে জিম্মি করে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে একাধিক ধাপে মোট ৯৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় গ্রেপ্তাররা।
ভুক্তভোগী জানান, গত ৪ নভেম্বর তাকে আবারও শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসামিরা। পরে গত ৬ নভেম্বর ৪ নং আসামির নির্দেশনায় হুমকি ও অন্তু দেওয়ানের সাথে শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তাদের প্রস্তাবে রাজী না হলে ভুক্তভোগীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ এলোপাথারী চড় থাপ্পর দিয়ে টেনেহিঁচড়ে ৪নং আসামির কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আবারও বোতলে থাকা বিষাক্ত নেশাজাতীয় পানীয় ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক খেতে বাধ্য করে। ঘটনার পর অসুস্থ অবস্থায় কোনমতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে গুরুত্বর অসুস্থ ও অচেতন হয়ে পড়েন ওই শিক্ষার্থী। পরে সহপাঠী ও শিক্ষকরা গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেলে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়। এঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে আসামিরা আরও চড়াও হন।
চিকিৎসা শেষে আবারও গত ২৬ নভেম্বর দুপুর ১২ টার দিতে আইন বিভাগের একাডেমিক কক্ষে গেলে আগে থেকে অবস্থান করা আসামিরা সাথে সাথে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। পরে বিকেল ৩ টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরে গতকাল আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আজ সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ
এব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, মামলা দায়েরের পর আসামিদের সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।